ঢাকা , বুধবার, ০২ এপ্রিল ২০২৫ , ১৯ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শহীদ সেলিমের মৃত্যুর সাত মাস পর জন্ম নিল তার কন্যা 'রোজা' উপহার নিয়ে হাজির প্রশাসন


আপডেট সময় : ২০২৫-০৩-১০ ০০:৫৬:২৬
শহীদ সেলিমের মৃত্যুর সাত মাস পর জন্ম নিল তার কন্যা 'রোজা' উপহার নিয়ে হাজির প্রশাসন শহীদ সেলিমের মৃত্যুর সাত মাস পর জন্ম নিল তার কন্যা 'রোজা' উপহার নিয়ে হাজির প্রশাসন

 
মো. নাঈম হাসান ঈমন, ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার মল্লিকপুর এলাকার বাসিন্দা শহীদ সেলিম তালুকদারের পরিবারে আজ এক আবেগঘন মুহূর্ত। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত সেলিমের স্ত্রী সুমী আক্তার একটি ফুটফুটে কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেন। শনিবার (৮ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঝালকাঠির একটি বেসরকারি ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে এই কন্যাসন্তানের জন্ম হয়, যার নাম রাখা হয়েছে রোজা।
 
তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে শহীদ সেলিম তালুকদার (২৮) ছিলেন মেজো। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি। গত ১৮ জুলাই কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য বেরিয়ে ঢাকার ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে গুলিবিদ্ধ হন, দীর্ঘ ১৫ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ১ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন। শহীদ সেলিমের বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলা শহরের টিঅ্যান্ডটি এলাকায়। তিনি নারায়ণগঞ্জের মেট্রো নিটিং অ্যান্ড ডাইং মিলস লিমিটেডের সহকারী মার্চেন্ডাইজার পদে চাকরি করতেন। মারা যাওয়ার এক বছর আগে ঝালকাঠি শহরের কৃষ্ণকাঠি মুসলিমপাড়া এলাকার মতিউর রহমান চুন্নুর মেয়ে সুমিকে বিয়ে করেন সেলিম। মারা যাওয়ার ৪ দিন পর সুমি অসুস্থ হয়ে পড়লে পরীক্ষা করিয়ে পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন অন্তঃসত্ত্বা তিনি। মারা যাওয়ার আগে সেলিম তালুকদার জানতেন না তিনি সন্তানের বাবা হবেন।
 
বিয়ের মাত্র এক বছর পর, আড়াই মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর কাছে রেখে তার এই শোকাবহ মৃত্যুর খবর কাঁদিয়ে দেয় পুরো নলছিটি উপজেলা বাসীকে। মৃত্যুর সাত মাস পর তার কন্যার জন্ম হলো। তার সদ্য জন্ম নেওয়া কন্যার নাম রাখা হয়েছে ‘রোজা’, যা তার পিতার ডাকনাম ‘রমজান’ এর সঙ্গে মিলে যায়। সেলিমের পরিবারের জন্য নতুন জীবনের এই সূচনা কিছুটা হলেও তাদের শোকের মাঝে এক ধরনের আশার আলো হয়ে উঠেছে।
 
নবজাতক রোজাকে দেখতে গিয়েছিলেন জেলা প্রশাসক আশরাফুর রহমান, পুলিশ সুপার উজ্জ্বল কুমার রায়, সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর, পৌর প্রশাসক কাওসার হোসেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানা ইয়াসমিন, নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম। এ সময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নবজাতকের পরিবারকে বিভিন্ন উপহার দেওয়া হয়।এছাড়াও, জেলা প্রশাসন নবজাতকের চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয় বহন করার আশ্বাস দেয় এবং সিভিল সার্জন নবজাতকের চিকিৎসা সেবা মনিটরিং করবেন বলে জানান।
 
শহীদ সেলিমের মা সেলিনা বেগম বলেন, 'আমার ছেলে আজ বেঁচে থাকলে অনেক খুশি হতো। ও জেনে যেতে পারেনি বাবা হবে। এখন ওর স্মৃতি হিসেবে ওর সন্তানকে মানুষের মতো মানুষ করব। সবাই আমার ছেলের কন্যা ও তার স্ত্রীর জন্য দোয়া করবেন।'
 
জেলা প্রশাসক আশরাফুর রহমান বলেন, 'আমরা তার ফ্রি চিকিৎসা করানোর ব্যবস্থা করেছি। ভবিষ্যতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেলিমের কন্যা সন্তানকে সব সহযোগিতা করা হবে।'





 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ